ধর্মশাস্ত্র
১ নেফী ১৪


অধ্যায় ১৪

একজন স্বর্গদূত নেফীকে অযিহূদীদের উপর আশীর্বাদ এবং অভিশাপগুলো পড়ার কথা বলেন—সেখানে কেবল দুটি মণ্ডলী রয়েছে: ঈশ্বরের মেষশাবকের মণ্ডলী এবং শয়তানের মণ্ডলী—সকল রাজ্যে ঈশ্বরের ধার্মিকরা বিশাল এবং ঘৃণ্য মণ্ডলীর দ্বারা নির্যাতিত হয়—প্রেরিত যোহন পৃথিবীর শেষ সম্বন্ধে লিখবেন। প্রায় ৬০০–৫৯২ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে

এবং এটা ঘটবে যে, যদি অযিহূদীরা সেই দিন ঈশ্বরের মেষশাবকের কথা শোনে, সেই দিন তিনি তাদের সামনে নিজেকে বাক্যতে প্রকাশ করবেন, এবং শক্তিতেও, কাজেও, তাদের পথের প্রতিবন্ধকতা দূর করার মাধ্যমে—

এবং ঈশ্বরের মেষশাবকের বিরুদ্ধে তাদের হৃদয় কঠোর করবে না, তাদের তোমার পিতার বংশধরদের মধ্যে গণনা করা হবে; হ্যাঁ, তাদের ইস্রায়েলের বংশের মধ্যে গণনা করা হবে; এবং তারা চিরকালের জন্য প্রতিশ্রুত ভূমিতে আশীর্বাদ প্রাপ্ত এক জাতি হবে; তাদের আর বন্দী করা হবে না; এবং ইস্রায়েলের বংশকে আর বিভ্রান্ত করা হবে না।

এবং সেই মহা গর্তটি, যা তাদের জন্য সেই বিশাল এবং ঘৃণ্য মণ্ডলীর দ্বারা খনন করা হয়েছিলো, যা শয়তান এবং তার সন্তানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, যাতে সে মানুষের আত্মাকে নরকের দিকে নিয়ে যেতে পারে—হ্যাঁ, সেই মহা গর্তটি যা খনন করা হয়েছিলো মানুষের ধ্বংস আনার জন্য, তা পূর্ণ হবে যারা এটা খনন করেছিলো তাদের দ্বারা, তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস পর্যন্ত, ঈশ্বরের মেষশাবক বলেছেন; আত্মার ধ্বংস নয়, এটাকে সেই নরকে নিক্ষেপ করা ছাড়া যার কোন শেষ নেই।

কারণ দেখো, এটা তাদের প্রতি যারা শয়তানের বন্দীদশা অনুসারে, এবং ঈশ্বরের ন্যায়বিচার অনুসারে, তাঁর সামনে মন্দতা ও জঘন্যতা করবে।

এবং এটা ঘটলো যে, স্বর্গদূত আমার, অর্থাৎ নেফীর সাথে কথা বললেন: তুমি দেখেছো যে, যদি অযিহূদীরা অনুতাপ করে তবে তাদের মঙ্গল হবে; এবং ইস্রায়েল বংশের সাথে করা প্রভুর চুক্তিগুলো সম্পর্কেও তুমি জানো; এবং তুমি এটাও শুনেছো যে অনুতাপ না করে সে অবশ্যই ধ্বংস হবে।

অতএব, অযিহূদীদের দুর্ভাগ্য যে যদি তারা ঈশ্বরের মেষশাবকের বিরুদ্ধে তাদের হৃদয় কঠোর করে।

কারণ সেই সময় আসছে, ঈশ্বরের মেষশাবক বলেছেন, যখন আমি মনুষ্য সন্তানদের মধ্যে একটা মহান এবং একটা বিস্ময়কর কাজ করবো; একটা কাজ যা চিরস্থায়ী হবে, হয় একদিকে বা অন্যদিকে—হয় তাদের শান্তি ও অনন্ত জীবনের প্রতি দৃঢ়প্রত্যয়ী করার জন্য, অথবা তাদেরকে হৃদয়ের কঠোরতার এবং তাদের মনের অন্ধত্বের দিকে পৌঁছে দিতে যতক্ষণ না তাদেরকে বন্দীদশায় নামিয়ে আনা হচ্ছে, এবং ধ্বংসের মধ্যেও আনা হচ্ছে, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক ধ্বংস উভয়ই, শয়তানের বন্দিদশা অনুসারে, যার কথা আমি বলেছি।

এবং এটা ঘটলো যে, যখন স্বর্গদূত এই কথাগুলো বলছিলেন, তখন তিনি আমাকে বললেন: তোমার কি ইস্রায়েলের বংশের সাথে করা পিতার চুক্তিলোর কথা মনে আছে? আমি তাঁকে বললাম, হ্যাঁ।

এবং এটা ঘটলো যে, তিনি আমাকে বললেন: তাকাও, এবং সেই বিশাল এবং ঘৃণ্য মণ্ডলীকে দেখো, যা জঘন্যতার জননী, যেটার প্রতিষ্ঠাতা হলো শয়তান।

১০ এবং তিনি আমাকে বললেন: কিন্তু দেখো শুধু দুইটা মণ্ডলীই আছে; একটা হল ঈশ্বরের মেষশাবকের মণ্ডলী, এবং অন্যটাশয়তানের মন্ডলী; অতএব, যে ঈশ্বরের মেষশাবকের মণ্ডলীর অন্তর্গত নয় সে সেই বিশাল মণ্ডলীর অন্তর্গত, যেটা জঘন্যতার জননী; এবং সে সমস্ত পৃথিবীর পতিতা।

১১ এবং এটা ঘটলো যে আমি তাকালাম এবং সমস্ত পৃথিবীর পতিতাকে দেখলাম, এবং সে মহা জলরাশির উপর বসে ছিলো; এবং সমস্ত পৃথিবীর উপর, সমস্ত জাতিসমূহের, সম্প্রদায়ের, ভাষার, এবং মানুষের উপর তার প্রভুত্ব ছিলো।

১২ এবং এটা ঘটলো যে আমি ঈশ্বরের মেষশাবকের মণ্ডলীটাকে দেখলাম, এবং মহা জলরাশির উপর বসে থাকা পতিতার মন্দতা এবং জঘন্যতার কারণে, এটার সংখ্যা সামান্য ছিলো; তবুও, আমি দেখলাম যে মেষশাবকের মণ্ডলী, যারা ঈশ্বরের ধার্মিক ছিলো, তারাও সমস্থ ভূপৃষ্ঠে ছিলো; এবং ভূপৃষ্ঠে তাদের আধিপত্য ছোট ছিলো, সেই মহান পতিতার মন্দতার কারণে, যাকে আমি দেখলাম।

১৩ এবং এটা ঘটলো যে, আমি দেখলাম জঘন্যতার মহা জননীকে, ঈশ্বরের মেষশাবকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য, অযিহূদীদের সমস্ত জাতির মধ্যে থেকে বহু সংখ্যক লোককে একত্রিত করেছে, সমস্ত ভূপৃষ্ঠে।

১৪ এবং এটা ঘটলো যে, আমি, নেফী, ঈশ্বরের মেষশাবকের ক্ষমতা দেখলাম, যে এটা মেষশাবকের মন্ডলীর ধার্মিকদের উপর, এবং প্রভুর চুক্তিবদ্ধ লোকদের উপর নেমে এসেছিলো, যারা সমস্ত ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে ছিলো; এবং মহান মহিমায় তারা ধার্মিকতায় এবং ঈশ্বরের ক্ষমতায় সজ্জিত ছিলো।

১৫ এবং এটা ঘটলো যে, আমি দেখলাম যে ঈশ্বরের ক্রোধ সেই বিশাল এবং ঘৃণ্য মণ্ডলীর উপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিলো, এতটাই যে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যে এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ এবং যুদ্ধের গুজব চলছিলো।

১৬ এবং তাই সমস্ত জাতিদের মধ্যে যুদ্ধ এবং যুদ্ধের গুজব শুরু হয়েছিলো, যা জঘন্যতার জননীর অন্তর্গত ছিলো তখন স্বর্গদূত আমাকে বললেন: দেখো, পতিতাদের মাতার প্রতি ঈশ্বরের ক্রোধ; এবং দেখো, তুমি এই সব কিছু দেখলে—

১৭ এবং যখন সেই দিন আসবে যে পতিতাদের মাতার উপর ঈশ্বরের ক্রোধ ঢেলে দেওয়া হবে, যেটা সমস্ত পৃথিবীর বিশাল এবং ঘৃণ্য মণ্ডলী, যেটার প্রতিষ্ঠাতা শয়তান, তখন, সেই দিন, পিতার কাজ শুরু হবে, তাঁর চুক্তি পূর্ণ করার পথ প্রস্তুত করার জন্য, যা তিনি তাঁর লোকদের জন্য করেছিলেন, যারা ইস্রায়েলের বংশের।

১৮ এবং এটা ঘটলো যে, স্বর্গদূত আমার কাছে কথা বলেছিলেন, বললেন: দেখো!

১৯ এবং আমি তাকিয়ে একজন লোককে দেখলাম, এবং তিনি একটা সাদা পোশাক পরেছিলেন।

২০ এবং স্বর্গদূত আমাকে বললেন: দেখো মেষশাবকের বারোজন প্রেরিতের একজন।

২১ দেখো, তিনি দেখবেন এবং এর বাকিটা সম্বন্ধে লিখবেন; হ্যাঁ, এবং আরও অনেক কিছু যা হবে।

২২ এবং তিনি জগতের শেষের বিষয়েও লিখবেন।

২৩ অতএব, তিনি যা লিখবেন তা ন্যায় ও সত্য; এবং দেখো সেগুলো সেই পুস্তকে লেখা আছে যা তুমি যিহূদীদের মুখ থেকে বের হতে দেখেছো; এবং যখন তা যিহূদীদের মুখ থেকে বেরিয়েছিলো, বা, যে সময়ে বইটা যিহূদীদের মুখ থেকে বেরিয়েছিলো, তখন যা লেখা ছিলো তা সরল এবং বিশুদ্ধ ছিলো, এবং সবচেয়ে মূল্যবান এবং সকল মানুষের বোঝার পক্ষে সহজ।

২৪ এবং দেখো, মেষশাবকের এই প্রেরিত যা লিখবেন তার অনেকগুলো বিষয় হচ্ছে যা তুমি দেখেছো; এবং দেখো, বাকিগুলো তুমি দেখতে পাবে।

২৫ কিন্তু এরপরে তুমি যা দেখতে পাবে তা তুমি লিখবে না; কারণ প্রভু ঈশ্বর ঈশ্বরের মেষশাবকের সেই প্রেরিতকে নিযুক্ত করেছেন যে তিনিসেগুলো লিখবেন।

২৬ এবং অন্যান্যরা যারা ছিলেন, তিনি তাঁদের সব কিছু দেখিয়েছেন, এবং তাঁরা সেগুলো লিখেছেন; এবং তা বন্ধ করে রাখা আছে প্রভুর নিজের নির্ধারিত সময়ে, ইস্রায়েলের বংশের কাছে মেষশাবকের মধ্যে থাকা সত্য অনুসারে বিশুদ্ধতায় বেরিয়ে আসার জন্য।

২৭ এবং আমি, নেফী, শুনেছি এবং সাক্ষ্য বহন করছি যে, স্বর্গদূতের কথা অনুযায়ী, মেষশাবকের সেই প্রেরিতের নাম ছিলো যোহন।

২৮ এবং দেখো, আমি, নেফী, আমি যা দেখেছি এবং শুনেছি সেগুলোর বাকিটুকু লিখতে আমায় নিষেধ করা হয়েছে; তাই আমি যা লিখেছি তা আমার জন্য যথেষ্ট; এবং আমি যা দেখেছি সেটার একটা ছোট অংশই আমি লিখেছি।

২৯ এবং আমি সাক্ষ্য বহন করছি যে আমার পিতা যা দেখেছিলেন আমি সেই সব দেখেছি, এবং প্রভুর স্বর্গদূত সেগুলো আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন।

৩০ এবং এখন আমি সেই সব বিষয়ে কথা বলা শেষ করছি যা আমি দেখেছিলাম আত্মার দ্বারা বশীভূত হওয়ার সময়; এবং আমি যা দেখেছি তার সবকিছু লেখা না থাকলেও, আমি যা লিখেছি তা সত্য। এবং এইভাবে এটা হয়। আমেন।

Print